Friday, February 21, 2014

‘শ্রমমান নিশ্চিত করুন, নইলে ব্যবসা ছেড়ে দিন’


কারখানায় আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও শ্রমমান নিশ্চিত করতে অনাগ্রহী তৈরি পোশাক মালিকদের ব্যবসা বন্ধ করে খাত ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা।


একইসঙ্গে তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনে সব মালিকরা যাতে অংশ নেয় তা নিশ্চিত করতে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে শ্রম আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

মজীনা বলেন, “যে সমস্ত মালিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও শ্রম অধিকার মান বজায় রাখতে চাইবে না তাদের ব্যবসা বন্ধ করে এই খাত ছাড়তে হবে।”

“শ্রমিকদের শোষণ করে মুনাফা এবং ভবিষ্যতে তাজরিন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনার মাধ্যমে পুরো খাতকে বিপদে রেখে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডকে ধ্বংস করার কোনো অধিকার তাদের নেই।”

অনুষ্ঠানে নতুন শ্রম আইনের বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মশালার সমাপনী সনদ বিতরণ করা হয়।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে ১১২ জনের মৃত্যু এবং গত বছরের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধ্বসের ভয়াবহ ঘটনায় ১১৩২ জনের প্রাণহানির পরেও অনেক কারখানার মালিক শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগ্রহী নয়।

ওই দুটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর তৈরি পোশাক ছাড়া নির্ধারিত কিছু বাংলাদেশি পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার (জিএসপি) সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে এই সুবিধা পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের জন্য বেশকিছু শর্তসহ একটি কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করে ওবামা সরকার।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ওই কর্মপরিকল্পনার ১৬টি বিষয়ের মধ্যে ১৩টি বিষয় বাস্তবায়ন করেছে সরকার। মধ্য এপ্রিলে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে বাকি শর্তগুলোও পূরণ করা হবে।

আন্তর্জাতিক শ্রমমান রক্ষা করে কারখানা চালানো পোশাক মালিকদের অভিনন্দন জানিয়ে মজীনা বলেন, যারা শ্রম নিশ্চিত করতে চায় না তাদের কারণে রানা প্লাজা ও তাজরিন ফ্যাশনসের ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

“তবে তারা এখন তাদের মুনাফা নিয়ে ব্যস্ত। আরো দুর্ঘটনা বাংলাদেশকে বিশ্ব বাজার হারানোর হুমকির মুখে ফেলার মুহূর্তেই এই মালিকরা মুনাফা নিয়ে অন্যত্র চলে যাবে।”

তবে পোশাক খাতের পরিবর্তনে শক্তিশালী নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করলেও আরো কিছু করার বাকি রয়েছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত।

বিশেষত ২০০ কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া এবং সবার জন্য উন্মুক্ত কারখানা পরিদর্শনের ডাটাবেজ তৈরির ওপর জোর দেন তিনি।

ঢাকার শ্রম অধিদপ্তরের ৩০ কর্মকর্তার জন্য দুদিনের জন্য এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

তাদের শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকারসহ নতুন সংশোধিত শ্রম আইনের নানা বিষয়ে জানানো হয়।

No comments:

Post a Comment