Thursday, March 6, 2014

চাঁদের আলোয় শক্তি উৎপাদন!


নিউজ ডেস্ক : আজ তা বাস্তব। মানুষের শক্তির প্রয়োজনীয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। মানুষের ক্রমবর্ধমান শক্তিক্ষুধা মেটাতেই বিজ্ঞানীরা হাত বারিয়েছেন চাঁদের আলোর দিকে। চাঁদের আলো হয়ত ভবিষ্যতে আর শুধু কবিতায় থাকবে না থাকবে বিজ্ঞানীদের টেবিলেও।

কাহিনীর সূত্রপাত যখন Barcelona ভিত্তিক কোম্পানি Rawlemon প্রথম বাড়ির জানালায় স্বচ্ছ সৌরশক্তি উৎপাদনকারী ব্যবস্থার নকশা প্রণয়নের কাজে হাত দেয়। আন্দ্রে বাসেল, একজন জার্মান স্থাপত্যবিদ । তিনি একটি প্রায় স্বচ্ছ কাচের গোলক তৈরি করেন যা কিনা জানালার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, এবং তা সৌরশক্তি সংগ্রহ করতে পারবে । কিন্তু এই নকশা যে কতটা কার্যকর তা বোঝা গেল যখন নকশাটির প্রোটোটাইপ পরীক্ষা করতে নেয়া হল । বাসেলের এই নকশা সাধারন সোলার প্যানেল থেকে ৩৫% বেশি কার্যদক্ষতা দেখায়। আমরা জানি যে আমাদের বর্তমান প্রযুক্তির সোলার প্যানেলগুলোর কার্যদক্ষতা খুবই কম ।

দুনিয়া জুড়ে গবেষণা চলছে কিভাবে সোলার প্যানেলের কার্যদক্ষতা বাড়ানো যায় । সেক্ষেত্রে বাসেলের নকশা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।

শুধুমাত্র কার্যদক্ষতাই নয়, বাসেলের এই নকশা আমাদের বর্তমান সোলার প্যানেলের একটি বড় সমস্যাকে সমাধান করে। বর্তমান সোলার প্যানেলগুলো মেঘলা দিনে কাজ করতে পারে না। কিন্তু বাসেলের নকশা আলোকতরঙ্গকে ঘনীভূত করে তীব্রতা দশ হাজারগুণ বাড়িয়ে দেয়। আর একারনেই এই সোলার প্যানেল শুধুমাত্র মেঘলা দিনেই নয়, রাতেও চাঁদের আলোকে শক্তিতে রুপান্তর করতে পারে। তবে চাঁদের আলো থেকে কিন্তু আহমরি পরিমানের শক্তি উৎপাদন করা যাবে না । চাঁদের আলোর তীব্রতা অনেক কম, প্রতি বর্গ মিটারে ১.৪৬ মিলিওয়াট । যা কিনা সূর্যের আলোর তীব্রতার তিন লাখ বিয়াল্লিশ হাজার ভাগের এক ভাগ মাত্র । তাই বিজ্ঞানীদের চোখ এখন মেঘলা দিনের আলোর উপর আর এই নকশার কার্যদক্ষতা আরও বাড়ানোর উপরেই নিবদ্ধ। বোঝাই যাচ্ছে চাঁদের আলো কবিতায় যত ভাল শক্তি উৎপাদনে ততটা নয় !

তবে বাসেলের নকশা কি সব পূর্ববর্তী সোলার প্যানেলকে প্রতিস্থাপন করবে? বাসেলের তৈরি এই কাচ গোলকের ওজন একটি বড় বিষয়। এছাড়াও কাচটিকে কত সুষ্ঠভাবে তৈরি করতে হবে তার উপর নির্ভর করে সমস্ত ব্যবস্থার দাম । কারন সম্পূর্ণ গোল গোলক তৈরি করার জন্য বিশেষ ব্যাবস্থার প্রয়োজন হয়, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। কাচ গোলককে কত নিখুতভাবে পরিস্কার করতে হবে সেটাও একটি বিষয়। এ বিষয়ে এখনও গবেষণা চলছে, তবে এর ওজন খুব বড় একটা সমস্যা হবে না, কারণ একে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি জানালা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটা একটি অসাধারণ স্থাপত্যের উপকরণ যা কিনা শক্তিও উৎপাদন করে। এখন দেখার বিষয় ভবিষ্যতের স্থাপত্যবিদরা একে কিভাবে ব্যাবহার করে।

No comments:

Post a Comment